মঙ্গলবার , ৩০ জানুয়ারি ২০২৪ | ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অপরাধ
  2. অর্থনীতি
  3. আন্তর্জাতিক
  4. আরো
  5. খুলনা
  6. খেলাধুলা
  7. চট্টগ্রাম
  8. জাতীয়
  9. ঢাকা
  10. তথ্যপ্রযুক্তি
  11. ফ্যাশন
  12. বরিশাল
  13. বিনোদন
  14. বিশেষ প্রতিবেদন
  15. ময়মনসিংহ

খেজুর গুড়ের ব্যাপক চাহিদা থাকলেও কমছে গাছ

প্রতিবেদক
আপডেট পোস্ট ২৪ ডেস্ক;
জানুয়ারি ৩০, ২০২৪ ১১:০২ অপরাহ্ণ

এনায়েত করিম : ঐতিহ্যবাহী খেজুর গুড়ের ব্যাপক চাহিদা থাকলেও বাগেরহাটের  মোরেলগঞ্জে দিন দিন কমে আসছে খেজুর গাছের সংখ্যা কিছুটা কমলেও ব্যাপক হারে কমছে গাছিদের সংখ্যা। চাহিদার তুলনায় রসের জোগান অনেক কম থাকায় ভেজাল গুড়ে বাজার সয়লাব। ফলে আসল খেজুর গুড়ের স্বাদ হতে বঞ্চিত হচ্ছে বর্তমান প্রজন্মসহ জনগোষ্ঠী।
উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ১৬টি ইউনিয়ন ও ১ টি পৌরসভায় সাড়ে ৩৪ হাজার ৫ শত রস আহরণ যোগ্য খেজুরগাছ রয়েছে। এখন থেকে ২০ বছর আগে উপজেলার মাঠ, ঘাট, প্রত্যেকের বসত বাড়িতে এবং রাস্তার দুই ধারে সারি সারি খেজুর গাছ ছিল। এখনো যে গাছ রয়েছে তা থেকে শীত কালীন কিছু গাছের রস সংগ্রহের কাজ চালছে। সারা বছর অবহেলায় পড়ে থাকা অগোছালো খেজুর গাছগুলোকে প্রস্তুত করে নলি ও ভাড় ঝুলিয়ে দিলেও চাহিদা মতো রস মিলছে না। আবার ব্যাপক হারে গাছি সংকটে অনেক খেজুর গাছ পূর্বের অগোছালো অবস্থায় পড়েও থাকছে।
খেজুরের রস দিয়ে তৈরি হয় সুস্বাদু গুড় এবং পাটালি গুড়। গ্রাম অঞ্চলে শীতের পুরো মৌসুমে চলে রস, গুড়, পিঠা, পুলি ও পায়েস খাওয়ার উৎসব। শহরে বসবাসকারী শীত মৌসুমে সন্তানদের নিয়ে গ্রামে আসেন এ উৎসবের সামিল হতে। কিন্তু সে তুলনায় এ উপজেলায় রসের জোগান তুলনামুলক অনেক কম থাকায় বাজারে বিক্রি হচ্ছে  ভেজাল গুড়। ফলে আসল খেজুর গুড়ের স্বাদ হতে বঞ্চিত হচ্ছে বর্তমান প্রজন্মসহ বিপুল জনগোষ্ঠী এবং হুমকির মুখে  পড়ছে মানব সাস্থ্য। কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তনসহ মাটি লবণাক্ততা ও নজরদারি না থাকায় গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী পরিবেশবান্ধব খেজুর গাছ এখন প্রায় বিলুপ্তির পথে।
উপজেলার হোগলাবুনিয়া এলাকার গাছি মোতালেব হোসেন জানান, তিনি ৩০ থেকে ৩৫ বছর ধরে খেজুর গাছ কাটেন। আগে প্রতিদিন এক থেকে দেড়শো  অন্যের খেজুর গাছ রসের অর্ধেক ভাগা চুক্তিতে কাটতেন। রসও পেতেন ভালো।এক সিজনে রস ও গুড় বিক্রি করে প্রায় ৪০ থেকে ৪৫ হাজার টাকা আয় হলেও বর্তমানে গাছের সংখ্যা কমে যাওয়ায় চাহিদা অনুযায়ী রস থেকে গুড় উৎপাদন করে বিক্রি করা যাচ্ছে   না। তবে এসব কারনে এ পেশায় তেমন আয় করা সম্ভব হচ্ছে না।
খাউলিয়া এলাকার বৃক্ষপ্রেমী করিম শেখ  বলেন, আগে প্রায় বাড়িতে খেজুর গাছ ছিল। কিন্তু বর্তমানে খেজুর গাছ কমে যাওয়ায় রসও কমে গেছে তাই গ্রামের বেশিরভাগ মানুষ আগের মতো রস খেতে পারে না। তাছাড়া ইট ভাটায় জ্বালানি হিসেবে  ব্যবহার ও বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণের কারণেও খেজুর গাছের সংখ্যা দিন দিন কমে যাওয়ার অন্যতম কারণ বলে মনে করেন তিনি।
 আগেকার দিনে বিভিন্ন এলাকায় শিশু কিশোরেরা খেজুরের রস দিয়ে পায়েস উৎসব করলেও রস আহোরন যোগ্য খেজুর গাছ কমে যাওয়ায় বর্তমানে তা আর দেখা যায় না।
তা ছাড়া তখন গাছিরা এক ভাড় কাঁচা রস বিক্রি করত ৪০ থেকে ৫০ টাকা। আর এখন তার দাম ১০০ থেকে ১২০ টাকা। এছাড়া গুড়ের দামও ছিল ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজি। আর এখন এক কেজি খাঁটি গুড়ের দাম ২০০ থেকে ২৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। তবে বেশির ভাগ ভেজাল অর্থাৎ চিনি মেশানো খেজুরের গুড়ে বাজার সয়লাব।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আকাশ বৈরাগী জানান, ইট ভাটায় জ্বালানি হিসেবে তেমন  ব্যবহার না করলেও জলবায়ু পরিবর্তনসহ মাটি লবণাক্ততায় দিন দিন গাছ ও গাছির হার কমে যাওয়ায় বর্তমান প্রজন্ম গাছি পেশায় না আসায় রস সংগ্রহ ব্যহত হচ্ছে বলে আমার ধারনা।

সর্বশেষ - নিজস্ব প্রতিবেদক