শুক্রবার , ১৯ জানুয়ারি ২০২৪ | ১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অপরাধ
  2. অর্থনীতি
  3. আন্তর্জাতিক
  4. আরো
  5. খুলনা
  6. খেলাধুলা
  7. চট্টগ্রাম
  8. জাতীয়
  9. ঢাকা
  10. তথ্যপ্রযুক্তি
  11. ফ্যাশন
  12. বরিশাল
  13. বিনোদন
  14. বিশেষ প্রতিবেদন
  15. ময়মনসিংহ

জলবায়ু পরিবর্তনে মোরেলগঞ্জ উপকূলবাসীর জীবন জীবিকা ব্যাহত

প্রতিবেদক
আপডেট পোস্ট ২৪ ডেস্ক;
জানুয়ারি ১৯, ২০২৪ ১১:১৫ অপরাহ্ণ

এনায়েত করিম : দেশের উপকূলীয় জেলা বাগেরহাটের অন্যতম উপজেলা পানগুছি নদীর কোল ঘেঁষা মোরেলগঞ্জ। ১৬ ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা নিয়ে গঠিত। একদিকে এ উপজেলার প্রধান সমস্যা হচ্ছে লবনাক্ততা। অন্যদিকে, দিন দিন জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে এ অঞ্চলের প্রধান অর্থকারী ফসল কৃষি ও মৎস্য ঘের ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। পানিতে লবণাক্ততার মাত্রা বেড়ে যাওয়ার ফলে কমে যাচ্ছে ধান সহ বিভিন্ন প্রকারের সবজি ও ফসল উৎপাদন।

উষ্ণ আবহাওয়ার কারণে মার্চ- জুন পর্যন্ত পানির তাপমাত্রা বেড়ে ৩৩-৪০ ডিগ্রিতে আসার কারনে ঘেরগুরোতে বিভিন্ন ধরনের ভাইরাস লেগে মাছ মারা যায়।

নিশানবাড়িয়া গ্রামের মনির শিকারি বলেন, বিগত ৮ থেকে ১০ বছর আগেও যেসব ঘের থেকে বছরে কয়েক লক্ষ টাকা আয় করতাম সেখানে ঘিরে মাছে ভাইরাসের কারণে মড়ক লেগে প্রায় প্রতিবছর লোকসান হচ্ছে । দিন দিন লোকসানের কারণে ঋণের বোঝা বেড়ে যাচ্ছে।

খাউলিয়া ইউনিয়নের কৃষক আব্দুল ওহাব বেপারী বলেন, আগে যেখানে বছরে একই জমিতে দুইবার ধান ফলিয়েছি সেখানে এখন কোনমতে একবার ধান উৎপাদন করা যায় তাও আশানুরূপ নয়। জমিতে লবণাক্ততা বেড়ে যাওয়া সহ বিভিন্ন পোকায় আক্রান্তের কারণে সমস্যা দিন দিন বেড়েই চলছে।

আসমা বেগম বলেন আমাদের লবণ পানিতে গোসল করার কারণে শরীরে বিভিন্ন চর্মরোগসহ বিভিন্ন সমস্যা বেড়েই চলছে। সবচেয়ে ঝুঁকিতে শিশু এবং বৃদ্ধরা।

বাড়ইখালী গ্রামের তহুরা বেগম আক্ষেপ করে জানান, আগে বাড়ির পাশ থেকে খাবারের জন্য সুপ্রিয় পানি সংরক্ষণ করতাম সরকারি পিএসএফ থেকে। বর্তমানে সেটি নষ্ট থাকায় আমাদের পুকুরের পানি সরাসরি খেতে হচ্ছে। এতে ডায়রিয়া আমশয় সহ বিভিন্ন স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি বাড়তে থাকে প্রতিনিয়ত।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এনজিও কর্মী জানান, জলবায়ু পরিবর্তনের কারনে নারী পুরুষ সকলেই স্বাস্থ্যের ঝুঁকিতে পড়ছে। আমিও গাইনি সমস্যায় ভুগছি। প্রথমে চিন্তিত ছিলাম পরে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়ার পরে জানতে পারলাম লবণাক্ত পানির কারণে এ সকল সমস্যা হচ্ছে। এটা শুধু আমার একার নয় বিভিন্ন নারীরা ভুগছেন গাইনি সমস্যায়।

মাটিতে লবণের মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় কোন ধরনের ফসলি আগের মত হচ্ছে না। তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে ফসলের পরাগায়ন ব্যাহত হচ্ছে , যার ফলে কমতেছে ফসলের উৎপাদনও। এতে কাঙ্ক্ষিত ফলন পাওয়া যাচ্ছে না। তবে মডিফাই ও হাইব্রিড জাতীয় ফসলের উপর বেড়েছে নির্ভরশীলতা। ফলে রোগ বেদের ঝুঁকি বাড়ছে। এই অঞ্চলের প্রায় ৫৫ ভাগ মানুষই কৃষির সাথে জড়িত। দিন দিন জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে কৃষকরা এ পেশা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে। নদী ভাঙ্গনের কারণে বাস্তুহারা হয়ে দিন দিন অনেক পরিবার শহর মুখি হচ্ছে। এতে শহরের জনসংখ্যা চাপ বেড়েছে তেমনি শহরের পরিবেশও দিন দিন অসাস্থ্যকর ঝুঁকির মধ্যে পড়ছে। বৈশ্বিক উষ্ণতায় এ জলবায়ুর পরিবর্তন এর মূল কারণ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এ থেকে পরিত্বরণের উপায় হিসেবে এলাকায় জনসাধারণ মনে করে, এখনই উন্নত রাষ্ট্রের কার্বন নিঃসরণ বন্ধসহ উপকূলীয় এলাকায় বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে কৃষকদের মাঝে কৃষি সার,বীজ, সরঞ্জামাদি সরবরাহ , টেকসই ভেরীবাধ , বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা করার জোর দাবি এই উপকূলীয় অঞ্চলে বসবাসরত মানুষের।

সর্বশেষ - নিজস্ব প্রতিবেদক