শুক্রবার , ১৯ জানুয়ারি ২০২৪ | ১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অপরাধ
  2. অর্থনীতি
  3. আন্তর্জাতিক
  4. আরো
  5. খুলনা
  6. খেলাধুলা
  7. চট্টগ্রাম
  8. জাতীয়
  9. ঢাকা
  10. তথ্যপ্রযুক্তি
  11. ফ্যাশন
  12. বরিশাল
  13. বিনোদন
  14. বিশেষ প্রতিবেদন
  15. ময়মনসিংহ

তিন যুগের বেশি সময় ধরে পত্রিকা বিলি করে চলছে দীপকের সংসার

প্রতিবেদক
আপডেট পোস্ট ২৪ ডেস্ক;
জানুয়ারি ১৯, ২০২৪ ১১:৩৫ অপরাহ্ণ

আরিফ তালুকদার : জীবনপাতার গল্পগুলো লিখা হয় মানুষের জীবন সংগ্রামের কাহিনী দিয়ে। সকাল থেকে অলিগলি রাস্তায়, বাসা বাড়ির সামনে, কিংবা হাটবাজারে পত্রিকা ফেরি করা মানুষগুলো সম্পর্কে ও তাদের সুখ-দুঃখের কথা কেউ তেমন জানতে চান না। নীরবে নিভৃতে চালিয়ে যায় জীবন সংগ্রাম।

দীপক বিশ্বাস, বয়স ৫৫। বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলা সদর থেকে ৫-৬ কিলোমিটার দূরে বারইখালী ইউনিয়নের চৌধুরী কাচারী গ্রামে তার বাড়ি। প্রতিদিন সকালে বাড়ি থেকে পাঁয়ে হেটে উপজেলা সদরে এসে পত্রিকা নিয়ে বিভিন্ন অলি-গলি, বাসা বাড়ি কিংবা অফিস-কার্যালয়ে পত্রিকা বিলি করে জীবিকা নির্বাহ করছেন তিনি। বাবা ঋষিকেশ বিশ্বাসের হাত ধরেই পত্রিকা বিক্রির এ পেশায় আসা দিপকের আয় দিয়েই চলে ২ সন্তান, স্ত্রী ও নিজের ভরনপোষণ। বড় ছেলে এইচএসসি পরিক্ষার্থী ও ছোট ছেলে নবম শ্রেণিতে পড়াশুনা করছে।

শত পাঠক ও গ্রাহকের পরিচিত নাম হকার দীপক। রাত পোহালেই যার অপেক্ষায় চেয়ে থাকে পাঠক ও গ্রাহকরা। রোদ-বৃষ্টি-ঝড় উপেক্ষা করে দীর্ঘ ৪০ বৎসরেরও বেশি সময় ধরে গ্রাহকের দ্বারে দ্বারে পত্রিকা পৌঁছে দেন হকার দীপক বিশ্বাস। সব প্রতিকূলতা পেরিয়ে তিনি পত্রিকা বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করেন।

অনেক কষ্টে কাটছে তার জীবন। পত্রিকা বিক্রি করে যা উপার্জন হয় তা ২ছেলের লেখাপড়া খরচ এবং পরিবারের ভরণপোষণ মেটাতেই শেষ। তার নিজস্ব স্বাদ আহ্লাদ বলতে কিছুই নেই। পত্রিকা বিক্রি থেকে যা রোজগার হয় তা দিয়ে কোনমতে দিনাতিপাত করছেন এই হকার দিপক।

সন্তানদের ভবিষ্যত নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করে দিপক বিশ্বাস বলেন, আগে প্রতিদিন শ’পাঁচেক পত্রিকা বিক্রি করলেও এখন সে দিন আর নেই। মানুষ প্রিন্ট পত্রিকা বা কাগজে ছাপা পত্রিকা খুব একটা পড়ে না বললেই চলে। ফেসবুকসহ বিভিন্ন মাধ্যমে আগেই দেশের খবর পেয়ে যায় মানুষ। কিছু পত্রিকা বিক্রি হয়, যারা পুরোনো ক্রেতা আর বয়স্ক মানুষেরা। প্রায় ৪০ বছর ধরে পত্রিকা বিক্রি পেশার সাথে জড়িত। আগে ৪/৫ জন হকার থাকলেও, এখন আমি একাই বিক্রি করি। ছাড়তেও পারিনা। তবে মালিকের দেনা লাখ টাকার উপরে।কিন্তু এ দেনা কিভাবে পরিশোধ করবো তা জানা নেই। সম্পত্তি বলতে বাবার রেখে যাওয়া ১০ শতক বসত ভিটা ছাড়া আর কিছুই নেই।

আমি প্রতিদিন সকালে দেশ ও দশের খবর সবার কাছে পৌঁছে দেই। অথচ আমার খবর নেয়ার কেউ নেই। সংবাদপত্র শিল্প টিকিয়ে রাখতে আমার মতো হকারদের ভূমিকা থাকলেও হকারদের ভাগ্য পরিরর্তনে কেউ এগিয়ে আসেনি। মোরেলগঞ্জ পৌর শহরের পুরাতন থানা রোডে পত্রিকা বিক্রি করতে করতে এভাবেই কথাগুলো অকপটে জানালেন দীপক বিশ্বাস।

সর্বশেষ - নিজস্ব প্রতিবেদক