সোমবার , ৭ আগস্ট ২০২৩ | ১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অপরাধ
  2. অর্থনীতি
  3. আন্তর্জাতিক
  4. আরো
  5. খুলনা
  6. খেলাধুলা
  7. চট্টগ্রাম
  8. জাতীয়
  9. ঢাকা
  10. তথ্যপ্রযুক্তি
  11. ফ্যাশন
  12. বরিশাল
  13. বিনোদন
  14. বিশেষ প্রতিবেদন
  15. ময়মনসিংহ

ষড়যন্ত্রের রাজনীতি ও বঙ্গবন্ধু হত্যার পটভূমি-পূর্বকথা : আবীর আহাদ

প্রতিবেদক
আপডেট পোস্ট ২৪ ডেস্ক;
আগস্ট ৭, ২০২৩ ১১:৩৪ অপরাহ্ণ

।। পূর্বকথা ।।
শেখ মুজিবুর রহমান। বঙ্গবন্ধু। বাঙালি জাতির পিতা। স্বাধীন ও সার্বভৌম জাতিরাষ্ট্র বাংলাদেশের স্থপতি। বাংলাদেশ রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাতা রাষ্ট্রপতি। বাঙালির হাজার বছরের আরাধ্য মহাপুরুষ। পূর্ববঙ্গ তথা পূর্ব পাকিস্তানের মানুষকে আদি ও অকৃত্রিম বাঙালিসত্তায় জাগ্রত করে, বাঙালি জাতীয়তাবাদের অগ্নিমন্ত্র ‘জয়বাংলা’ ধ্বনিতে উজ্জীবিত করে, জীবন-যৌবনের মায়ামমতা ভোগবিলাস বিসর্জন দিয়ে তিল তিল করে জাতিকে স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষায় উদ্বেলিত করে মুক্তিযুদ্ধের সোপান রচনা করেছিলেন। তাঁর বজ্রনিনাদ মেঘমন্দ্রিত জলদগম্ভির উদাত্তকন্ঠের আহ্বানে বাঙালি বীর মুক্তিযোদ্ধা জনতা জেগেছে, জয়বাংলা চেতনার ফল্গুধারায় জীবন ও রক্ত দিয়েছে, সীমাহীন ত্যাগ-তিতিক্ষা স্বীকার করেছে এবং অবশেষে হানাদার পাকিবাহিনীকে গ্লানিকর আত্মসমর্পণ করিয়ে ছিনিয়ে এনেছে স্বাধীনতার লালসূর্য। বিশ্বের মানচিত্রে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে একটি দেশ, বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ। কবির ভাষায় : বিশ্বকবির সোনার বাংলা, নজরুলের বাংলাদেশ, জীবনানন্দের রূপসী বাংলা, রূপের যে তার নেইকো শেষ, বাংলাদেশ। আর এই বাংলাদেশকে স্বাধীন করার লক্ষ্যে বাঙালি ও বিশ্বকে যাঁর তেজদৃপ্ত কন্ঠস্বর কাঁপিয়ে দিয়েছিল, যার আহ্বান ও নির্দেশে প্রায় দেড় লক্ষ বীর মুক্তিযোদ্ধার বীরত্ব ও ত্রিশলক্ষ বাঙালির আত্মদানে অর্জিত হয়েছে বাংলাদেশ। সেই দেশের প্রতিষ্ঠাতা-জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
১৯৪৮ থেকে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর। মুক্তিসংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের মহাবিজয়। এর মাঝখানে প্রাণের ভাষা বাংলা প্রতিষ্ঠার দাবি, শিক্ষা-সাংস্কৃতিক অধিকারের দাবি, স্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠার দাবি, আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে ঐতিহাসিক গণ-অভ্যুত্থান, সত্তর সালের ঐতিহাসিক নির্বাচন, একাত্তরের মার্চের ঐতিহাসিক অসহযোগ আন্দোলন, সাত মার্চের ‘এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’ বিষয়ভিত্তিক বিশ্বশ্রেষ্ঠ ঐতিহাসিক ভাষণ; ছাব্বিশ মার্চের আনুষ্ঠানিক স্বাধীনতা ঘোষণা এবং অত:পর মুজিবনগর বিপ্লবী সরকারের নেতৃত্বে ঐতিহাসিক রক্তাক্ত মুক্তিযুদ্ধ। বাংলাদেশ-ভারত যৌথ কমাণ্ড গঠন। বাংলাদেশ-ভারত-সোভিয়েত ইউনিয়ন মৈত্রী। বাংলাদেশের পক্ষে বিশ্বজনমত। বিপক্ষে পাক-মার্কিন-চীন-সৌদি তথা সাম্রাজ্যবাদী পুঁজিবাদী শক্তির অবস্থান।এভাবেই একাত্তরের ষোল ডিসেম্বর বাঙালি বীর মুক্তিযোদ্ধা ও ভারতীয় মিত্রবাহিনীর যৌথ অভিযানে আমরা স্বাধীন হলাম। আর এসবকিছুর নেতৃত্বে যে শুদ্ধ নামটি জড়িয়ে আছে, সেই মহানাম শেখ মুজিবুর রহমান। বলতে দ্বিধা নেই, শেখ মুজিবকে কেন্দ্র করে বিশ্বসমাজ যুধ্যমান দু’শিবিরে বিভক্ত হয়ে যুদ্ধের মাঠেই সমাধান রচিত হয় । আমরা বাঙালিরা বিজয়ী হলাম। বাংলাদেশ স্বাধীন হল।
এই বাংলাদেশকে একটি স্বাধীন বাঙালি জাতিরাষ্ট্রে প্রতিষ্ঠিত করতে গিয়ে তার জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে সেই ১৯৪৮ থেকে ১৯৭১ এই ২৩ বছরের ইতিহাসের প্রায় ১৪টি বছর পাকিস্তানের কারান্তরালে থাকতে হয়েছে। দু’দু’বার ফাঁসির মঞ্চে দাঁড়াতে হয়েছে। শেষবার ফাঁসির মঞ্চে দাঁড়িয়ে তিনি দৃপ্তকন্ঠে উচ্চারণ করেছেন : আমি বাঙালি, বাংলা আমার ভাষা, বাংলা আমার দেশ! জয়বাংলা!
১৯৭২ সালের দশই জানুয়ারি। পাকিস্তানের বন্দীদশা থেকে মুক্তিলাভ করেই বঙ্গবন্ধু স্বাধীন দেশের হাল ধরলেন। উনিশশো পঁচাত্তরের চোদ্দ আগস্ট পর্যন্ত তিনি সদ্যস্বাধীন ধ্বংসস্তূপের ওপর দাঁড়িয়ে থাকা দেশ পরিচালনা করেছেন। পনেরো আগস্ট ভোর বেলা তিনি পরিবার-পরিজনসহ নির্মমভাবে নিহত হলেন। আর এ নিহত হওয়ার পশ্চাতে কারা কীভাবে চক্রান্তের জাল বিছিয়ে ছিল।
বিভিন্ন পত্র পত্রিকা, বই-পুস্তক, নিজের অভিজ্ঞতা ও বিভিন্ন জনের কাছ থেকে যেসব তথ্য পাওয়া গেছে সেসবের ওপর ভিত্তি করে এ আলোচনার অবতারণা করছি। ইতোপূর্বে রচিত আমার গ্রন্থসমূহের পাঠকসমাজ নিশ্চয়ই অবগত আছেন যে, আমি যা-কিছু লিখি তা স্পষ্টাকারেই লিখি। এ ধারাবাহিক লেখাটি পড়েও তাদের হতাশ হতে হবে না। আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা । একাত্তরের রণাঙ্গনে দু’বার করুণ মৃত্যুর কবল থেকে ফিরে এসেছি। আজ অবধি বেঁচেও আছি, যে-বাঁচাকে তো আশ্চর্য্যজনক বেঁচে-থাকা বলাই শ্রেয়। সুতরাং যতোদিন বেঁচে থাকবো, সত্যের সাধনায়, মুক্তিযুদ্ধের অবিনাশী চেতনায়, বাংলাদেশের স্বাধীনতার মূল্যবোধে উজ্জীবিত থেকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে আমি আমার লেখনী চালিয়ে যেতে চাই । এ-ক্ষেত্রে সুধি পাঠকসমাজের উৎসাহ আমাকে প্রেরণা যোগাবে।
জয়বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু!
চলবে…
লেখক : আবীর আহাদ,
(বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক বহু গ্রন্থের লেখক)
চেয়ারম্যান
একাত্তরের মুক্তিযোদ্ধা সংসদ।

সর্বশেষ - নিজস্ব প্রতিবেদক